বদরুদ্দীন উমর test@gmail.com |
সাম্রাজ্যবাদই দুনিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতার সংগঠক
25 July 2016, Monday
ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সামরিক হামলা এবং সে দেশটি দখলের
ব্যাপারটি ছিল ঈশপের গল্পে নেকড়ে ও মেষশাবকের মতোই। সেটা যে এরকম ছিল তা
এখন সাম্রাজ্যবাদী মহলেও স্বীকৃত, যদিও এর সত্যতা আগেই তাদের জানা ছিল।
কারণ এ বিষয়ে মিথ্যাটি তারাই সৃষ্টি ও প্রচার করেছিল। সাদ্দাম হোসেনের কাছে
গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এই যুক্তি দেখিয়ে তারা ইরাককে ও নিজেদের ধ্বংসযজ্ঞ
থেকে রক্ষার জন্য ইরাকে সামরিক হামলা করেছিল। সাদ্দাম হোসেন তাদের এই
অভিযোগ বারবার অস্বীকার করা সত্ত্বেও তারা তাদের এই প্রচারণা নিজেদের
প্রচার মাধ্যমে দুনিয়াজুড়ে চালিয়েছিল। নিজেদের অভিযোগের সপক্ষে তারা কোনো
প্রমাণ উপস্থিত করতে পারেনি। কারণ প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, ভাইস
প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ও দেশরক্ষা সচিব ডোলান্ড র্যামসফেল্ড ত্রয়ী অভিন্ন
কণ্ঠে যা বলছিলেন সেটাই ছিল তাদের কাছে প্রমাণতুল্য! তারা বলেছেন, এর থেকে
বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে? এক্ষেত্রে কিছুটা অসুবিধা ঘটিয়েছিল জাতিসংঘের
পরমাণু ও পর্যবেক্ষক টিম। তারা পুঙ্খাপুঙ্খভাবে সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রে তদন্ত
করে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের মতো কিছুরই সন্ধান ইরাকে পাননি। টিমের নেতা
হ্যান্স ব্লিক্স খুব জোরের সঙ্গে সে সময় দাবি করেন, তারা যা বলছেন সেটাই
ঠিক। কারণ কোনো ধরনের গণবিধ্বংসী অস্ত্র ইরাকে থাকলে তারা নিজেদের তদন্তের
মাধ্যমে তার অস্তিত্ব অবশ্যই টের পেতেন। কিন্তু জাতিসংঘের পারমাণবিক
পর্যবেক্ষক দলের এই রিপোর্ট এবং ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অস্তিত্বহীনতার
দাবি সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার তল্পিবাহক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার জোর গলায় শেষ পর্যন্ত সাদ্দামের হাতে
গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার কথা বলে নিজেদের যুদ্ধ চালিয়ে শুধু সাদ্দাম
হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুতই করলেন না, ইরাকের মতো একটি দেশের সুসংহত সমাজকে
একেবারে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ও ধ্বংস করে দিলেন।