Monday, 19 September 2022

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

রিভিউ -১
মরহুম ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার এর বক্তব্য ও বইয়ের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক
১.প্রত্যেকটা বিষয়ের উপরে কোরআন এবং হাদিসের রেফারেন্স নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন।
২.কোরআন ও হাদিস বোঝার ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবী এবং পরবর্তী প্রজন্ম তাবেঈ ও তাবে তাবেয়ী গণের উপর নির্ভর করেছেন।
৩.হাদীসের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে পূর্বের মুহাদ্দিস এবং বর্তমান সময়ের মুহাদ্দিসগনের মতামতকে উল্লেখ করেছেন এবং হাদিসের শিক্ষক হিসেবে উনার নিজের মতামত ও দিয়েছেন।
৪.দাওয়াতের ক্ষেত্রে ফিকহী মতভেদ কে পরিহার করে কোরআন ও হাদিসের মৌলিক বিষয় গুলোকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন।
৫. নিজের জ্ঞান এবং পাণ্ডিত্য দেখানোর চেয়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানোর জন্য যে আবেগ, ভালোবাসা, আন্তরিকতা, নম্রতা ও ভাষা প্রয়োজন তা ব্যবহার করেছেন।
৬.প্রত্যেকটা বিষয়ের উপর লেখার ক্ষেত্রে ওই বিষয়ের উপরে যত রেফারেন্স আছে সামগ্রিক কোরআন ও হাদিসে, পূর্বের এবং বর্তমান যারা স্কলার তাদের মতামত কে সামনে নিয়ে এসেছেন।
৭.মুসলিমদের যে জামায়াত বা ঐক্য তা রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য যে মূল মানুষের অন্তর তা পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে যাতে কোনভাবে ঐক্য বিনষ্ট না হয় আজীবন তার চেষ্টা করেছেন।
৮.ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে খ্রিস্টান মিশনারীদের যে চক্রান্ত তা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তুলে ধরেছেন এবং মুসলিমদেরকে সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
৯.সমাজ ও রাষ্ট্রে দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টার পাশাপাশি ব্যক্তি ও পরিবারে ইসলামকে আপোষহীনভাবে ধারণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
১০.ইসলামের যে বিষয়টা যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সেই বিষয়কে ততটুকু গুরুত্ব প্রদান করা এর কম বেশি না করার ব্যাপারে বলেছেন।
১১.দাওয়াতের ক্ষেত্রে তাওহীদ ও আখেরাত কে সামনে নিয়ে আসা এবং বান্দার সাথে আল্লাহর কানেকশন তৈরি করে দেওয়া, সকল ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আখলাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
আরো অনেক বৈশিষ্ট্য আছে আপনারা কমেন্টে একটু বলবেন প্লিজ
বি.দ্র:আমার আসলে কোন ভাষার উপরে তেমন দখল নাই। আমার মূল ফোকাস হলো মেসেজটা পৌঁছে দেওয়া। সে ক্ষেত্রে শব্দের ব্যবহার, বাক্যের ব্যবহার ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বিশেষ করে ভয়েস টাইপিং এর জন্য কিছু বানান ভুল হতে পারে সে জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, পাশাপাশি কোন পরামর্শ থাকলে দয়া করে দিলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।
চলবে -----ইনশাআল্লাহ

 

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

 রিভিউ -২ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-১ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। ১.বইয়ের ভূমিকায় উনি লিখেছেন, ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি। শির্ক, কুফর, বিশ্বাসের দুর্বলতা, হিংসা, অহংকার, আত্মমুখিতা, কৃপণতা, নিষ্ঠুরতা, লোভ, ক্রোধ, প্রদর্শনেচ্ছা, জগতমুখিতা ইত্যাদি ব্যাধি থেকে মানুষের আত্মাকে পবিত্র করে বিশ্বাস এর গভীরতা, আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি গভীর প্রেম, সকল মানুষের প্রতি ভালোবাসা, আখিরাতমুখিতা,বিনয়,উদারতা,দানশীলতা,দয়াদ্রতা, সদাচরণ ইত্যাদি পবিত্র গুণাবলী অর্জন করে আল্লাহর বেলায়াত ও বন্ধুত্ব অর্জন করায় মুমিনের জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। এই বইয়ে মূল আলোচনার বিষয় হল আল্লাহর বন্ধুত্ব লাভের উপায় সমূহ বা পথ। ২.বেলায়াতের রাস্তা হলো সকল ফরজ কাজ আদায় এবং বেশি বেশি নফল ইবাদত করা। ফরজ ইবাদতের ব্যাপারে মোজাদ্দেদ আলফেসানী বলেছেন, একটি ফরজ ইবাদত যদি তাহার সময়মতো সম্পাদিত হয়, তবে সহস্র বৎসরের উক্তরূপ নফল ইবাদত হইতে তাহা শ্রেষ্ঠতর। ৩.এই বইয়ে আল্লাহর বন্ধুত্ব লাভের সকল কর্মকে,তথা মুমিন জীবনের সকল কর্মের গুরুত্ব ও পর্যায় দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। প্রথম -বিশুদ্ধ ঈমান দ্বিতীয়- বৈধ উপার্জন তৃতীয়- বান্দার হক সংশ্লিষ্ট হারাম বর্জন চতুর্থ- আল্লাহর অন্যান্য আদেশ-নিষেধ বিষয়ক হারাম বর্জন পঞ্চম- ফরজ কর্মগুলো পালন ষষ্ঠ- মাকরূহ তাহরীমী বর্জন ও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কর্ম পালন সপ্তম -মানুষ ও সৃষ্টির সেবা ও কল্যাণমূলক সুন্নত নফল ইবাদত পালন অষ্টম -ব্যক্তিগত সুন্নত নফল ইবাদত পালন এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, আমাদের সমাজের ধার্মিক মানুষেরা প্রায়শই অষ্টম পর্যায়ের কাজ গুলোকে অত্যন্ত বেশি গুরুত্ব দেন, অথচ বাকি বিষয়গুলোর প্রকৃত গুরুত্ব আলোচনা বা অনুধাবনে ব্যর্থ হন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কর্মের যতটুকু গুরুত্ব প্রদান করেছেন তাকে তার চেয়ে কম গুরুত্ব প্রদান করা যেমন কঠিন অপরাধ ও তাদের শিক্ষার বিরোধিতা, তেমনি বেশি গুরুত্ব প্রদান করা ও একই প্রকার অপরাধ। উদাহরণ হিসেবে বলেছেন,আমরা পাগড়ি-টুপি,জিকির, দস্তরখান ইত্যাদি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন কিন্তু ঈমান,বান্দার হক, হালাল উপার্জন, মানব সেবা সম্পর্কে উদাসীন। কেউ হয়তো গীবত, অহংকার, বান্দার হক নষ্ট, হারাম উপার্জন ইত্যাদিতে লিপ্ত,কিন্তু টুপি-পাগড়ি তাহাজ্জুদ ইত্যাদি অষ্টম পর্যায়ের ইবাদতে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

 রিভিউ -৩ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-২ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের পার্টে যে তিনটি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। ৪.তাযকিয়া হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর মূল মিশন এর একটি অংশ। তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি হলো সফলতার মূল। ইমাম তাবারি তার ব্যাখ্যায় বলেন তাযকিয়া শব্দটি যাকাত থেকে গৃহীত,আর যাকাত অর্থ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি। আয়াতে তাযকিয়া অর্থ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি বোঝানো হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিনগণকে শির্ক ও গাইরুল্লাহর ইবাদত থেকে পবিত্র করেন এবং আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এটাই তাজকিয়ার মূল অর্থ। দীনের সকল কর্মই তাযকিয়ার অন্তর্ভুক্ত এরপর ও মানসিক বিষয়গুলোর প্রতি কোরআন-হাদীসে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জেনে রাখ দেহের মধ্যে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে যদি সংশোধিত হয় তবে পুরো দেহ সংশোধিত হয় আর যদি তা নষ্ট হয় তবে পুরো দেহই নষ্ট হয় তা হলো কলব। ৫.তাযকিয়ার ক্ষেত্রে বর্জনীয় -শিরক, কুফর, আত্মপ্রেম, কুরআন সুন্নাহ এর বিপরীতে নিজের পছন্দকে গুরুত্ব প্রদান, হিংসা, অহংকার, লোভ, রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা, নিষ্ঠুরতা ইত্যাদি থেকে হৃদয়কে মুক্ত ও অপবিত্র করা। করণীয় -মনকে ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, আল্লাহ ভীতি, আল্লাহর রহমতের আশা, আল্লাহর ফয়সালার প্রতি সন্তুষ্টি, নির্লোভতা, সকলের প্রতি ভালোবাসা, কল্যাণ কামনা ইত্যাদি বিষয় দিয়ে পরিপূর্ণ করা। ৬.বেলায়েতের পথে জিকিরের সাথে অধ্যায়টিতে বেলায়েতের মৌলিক কাজ গুলোর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন। প্রথম -বিশুদ্ধ ঈমান, এখানে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদুল ইবাদাত,রিসালাতের প্রতি ঈমান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং বলেছেন এ বিষয়ে সচেতনতা ছাড়া সকল ইবাদতই অর্থহীন। দ্বিতীয় -ফরজ ও নফল ইবাদত পালন,এখানে বলেছেন ফরয ইলম, আকিদা, সালাত, যাকাত, সিয়াম হজ্জ,হালাল উপার্জন, সাংসারিক দায়িত্ব, পিতা-মাতা-সন্তান স্ত্রীর দায়িত্ব,সামাজিক দায়িত্ব, সৎকাজে আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ, ইত্যাদি সকল ফরজ ইবাদত পালন না করে নফল ইবাদত পালন বিশেষ কোনো উপকারে লাগবে না। এখানে ইবাদত কবুলের কয়েকটি শর্ত উল্লেখ করেছেন বিশুদ্ধ ঈমান, ইবাদতটি একমাত্র আল্লাহর জন্য হতে হবে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুযায়ী হতে হবে,হালাল জীবিকা নির্ভর হতে হবে। তৃতীয় -ফরজ ও নফলের পালনের ক্ষেত্রে বর্জনীয় কাজ করণীয় কাজের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

 রিভিউ -৪ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৩ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের দুটি পার্টে যে ছয়টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। ৭.কবিরা গুনাহ বর্জন নিয়ে কথা বলেছেন,কোরআন হাদিসের আলোকে কোনগুলো কবিরা গুনাহ সেগুলো উল্লেখ করেছেন। হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ বিষয়ক কয়েকটি কবিরা গুনাহ উল্লেখ করছি। -ঈমান বিষয়ক: শিরক, কুফর, নিফাক, বিদআত, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, তাকদিরে অবিশ্বাস করা, নিজের জীবন সম্পদ ও সকল মানুষের চেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বেশি ভালো না বাসা ইত্যাদি। -ফরয ইবাদত পরিত্যাগ বিষয়ক:সালাত পরিত্যাগ,যাকাত প্রদান থেকে বিরত থাকা,সিয়াম পালনে অবহেলা,সামর্থ্য থাকা সত্বেও হজ না করা ইত্যাদি। -হারাম খাদ্য ভক্ষণ বিষয়ক -অন্তর বিষয়ক :অহংকার, হিংসা, রিয়া ইত্যাদি। -পবিত্রতা ও অভ্যাস বিষয়ক:পেশাব থেকে পবিত্র না হওয়া, মিথ্যা কথা বলা,দাড়ি না রাখা,টাখনুর নিচে পোশাক ঝুলে পড়া ইত্যাদি। হক্কুল ইবাদ বিষয়ক কিছু কবিরা গুনাহ -রাষ্ট্রপ্রধান,প্রশাসক বা বিচারক কতৃক জনগণের দায়িত্ব, সম্পদ বা আমানত আদায়ে অবহেলা করা। -রাষ্ট্র প্রশাসনের অন্যায় জুলুম সমর্থন বা সহযোগিতা করা -অন্যায় দেখেও সাধ্যমত প্রতিকার বা প্রতিবাদ না করা -মুনাফিককে নেতা বলা -রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ বা ভোগ করা -মুসলিম সমাজে বসবাসরত অমুসলিম নাগরিকের কষ্ট প্রদান ও বাঁচার অধিকার নষ্ট করা -কর্কশ ব্যবহার ও অশ্লীল অশ্রাব্য কথা বলা -পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া বা তাদের কষ্ট প্রদান করা -ঘুষ গ্রহণ করা, প্রদান করা ও ঘুষের আদান-প্রদানের মধ্যস্থতা করা -গীবত ও পরিচর্যা করা -সমাজে অশ্লীলতা প্রসার করতে পারে এমন বিষয়ক প্রচার বিক্রয় আদান-প্রদান সবই কবিরা গুনাহ। মাত্র কয়েকটি উল্লেখ করলাম। ৮.আল্লাহর পথের পথিক দের পাপ: এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, শয়তানের সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য তার নিজস্ব পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচির রয়েছে। সবাইকে সে ধর্মহীন অবিশ্বাসী করতে চায়। যাদের ক্ষেত্রে পারে না তাদের জন্য ধর্মের আবরণে পাপের মধ্যে লিপ্ত করে অথচ সেগুলো কে অনুধাবন করা অনেক সময় ধার্মিক মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। এই সংক্রান্ত কিছু পাপ উল্লেখ করেছেন। ধার্মিক মানুষদের ধ্বংস করতে শয়তানের মূল অস্ত্র পাঁচটি শিরক, কুফর, বিদআত,হিংসা বিদ্বেষ ও বান্দার হক নষ্ট করা। সমাজে প্রচলিত কিছু শিরক- কুফর -অশুভ বা অযাত্রা বিশ্বাস করা -মূর্তিতে ভক্তিভরে ফুলদান, মূর্তির সামনে নীরবে ভক্তিভরে দাঁড়ানো ইত্যাদি এজাতীয় শিরকতুল্য কর্ম। -আল্লাহর কোনো বিধান বর্তমানে অচল বা মধ্যযুগীয় মনে করা -ইসলামকে শুধু ব্যক্তিজীবনে পালন করতে হবে এবং সমাজ,বিচার, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইসলাম চলবে না বলে মনে করা -কুফরীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকা ও কুফরী। অন্যান্য ধর্মের শিরক মূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা -ইসলাম জানতে ও বুঝতে আগ্রহ না থাকা মাত্র কয়েকটি উল্লেখ করলাম। বিদআত রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম ও তার সাহাবীগণ দীন বা ইবাদত হিসেবে পালন করেননি তাকে দীন, ইবাদত সওয়াবের কর্ম বলে মনে করা বিদআত। বিদআত একান্তই ধার্মিকদের পাপ। তাওহীদের বিশ্বাসের ঘাটতি থেকে যেমন শিরকের উৎপত্তি এবং রিসালাতের বিশ্বাসের ঘাটতি থেকে বিদআতের উৎপত্তি। পাপ যতই ভয়ঙ্কর হোক মুমিন সাধারণত এগুলো থেকে তওবা করতে পারেন কিন্তু বিদ'আত থেকে তাওবা করা খুবই কঠিন কারণ বিদআত পালনকারী এটাকে নেক আমল মনে করে পালন করেন। এর পরের পর্বে আরো কয়েকটি বড় বড় গোনাহ নিয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

১লা আগস্ট ২০২২,চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৫ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৪ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের চারটি পার্টে যে আটটি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। আল্লাহর পথে পথিকদের পাপগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম। গত পার্টে কুফর এবং বিদআত নিয়ে বই থেকে কিছু বিষয় তুলে ধরেছিলাম, আজকে কিবর বা অহংকার নিয়ে একটু বিস্তারিত বই থেকে তুলে ধরতে চাই। ৯. কিবর বা অহংকার: নিজেকে অন্য কোন মানুষ থেকে উত্তম বা বড় মনে করা,কাউকে কোন ভাবে হেয় করা হল অহংকার। মানুষ আল্লাহর নেয়ামত নিয়েই অহংকারে লিপ্ত হয়।অহংকার আমাদের নেক কর্ম বিনষ্ট করে দেয় এবং যার মধ্যে অণু পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আপনার জ্ঞান, সম্পদ, সৌন্দর্য,প্রভাব, শক্তি, বাকপটুতা, ডিগ্রী, পদমর্যাদা আরেকজন থেকে বেশি, এটা যদি নিজস্ব অর্জন মনে করেন তখনই অহংকার এর শুরু হয়। অহংকার সকল ক্ষেত্রেই ধ্বংসাত্মক অনুভূতি, তা যদি হয় ইবাদত কেন্দ্রিক তাহলে তো আরো বেশি ক্ষতিকারক। নিজেকে ভালো দ্বীনদার মনে করা শয়তানের অন্যতম চক্রান্ত। -অহংকার এর উদাহরণ দিয়েছেন, সাধারণ কোনো পোশাক পরে বেরোতে যদি আপনার লজ্জা বোধ হয় এবং এ অবস্থায় কোন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আপনাকে দেখে ফেলেন, তাতে যদি সংকোচ বোধ হয় তাহলে বুঝতে হবে মনের মধ্যে অহংকার বিদ্যমান। -কোন মজলিসের পিছনে বসলে যদি আপনার খারাপ লাগে,কেউ আপনাকে দেখে সম্মান করুক বা আগে সালাম দিক মনে হয় তাহলে আপনার অন্তর অহংকার আছে। অহংকার থেকে বাঁচার জন্য দুনিয়াবী সকল যোগ্যতা, ইবাদত পালনের সক্ষমতাকে আল্লাহর একান্ত দয়া রহমত হিসেবে তার দরবারে শুকরিয়া আদায় করা এবং নেয়ামতের স্থায়িত্বের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা । সাহাবী, তাবেয়ীগণ বা পূর্ববর্তী যুগের শ্রেষ্ঠতম বুজুর্গ নেককার মানুষেরা নিজেদেরকে জীব জানোয়ারের চেয়েও উত্তম ভাবতে পারতেন না। ১০.হিংসা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা : মানব হৃদয়ের নোংরা ও ক্ষতিকারক কর্ম বিদ্বেষ, ঘৃণা অমঙ্গল কামনা, পারস্পরিক শত্রুতা ইত্যাদি। অন্তরকে কলুষিত করে, ভারাক্রান্ত করে এবং আল্লাহর যিকির থেকে দূরে সরিয়ে দেয় সর্বোপরি নেক আমল নষ্ট করে দেয়। আমরা ধার্মিক মানুষেরা অনেক সময় নফল, ইখতালাফি বিষয় এবং মনগড়া কিছু আকিদাকে ঈমানের মানদন্ড বলে ফেলি এবং এগুলো নিয়ে ঘৃণা ছড়ায়। ঘৃণার সাথে ভালোবাসা জড়িত থাকে, মুমিনের পাপের দিকে নয় বরং তার ঈমানের দিকে আগে দৃষ্টি দিতে হবে। পাপের প্রতি ঘৃণার পাশাপাশি দরদ ভরা মন নিয়ে তার জন্য দোয়া করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া পাপ বা পাপীর চিন্তায় নিজের হৃদয় কে ব্যস্ত রাখা খুবই অন্যায়। সাধ্যমত সর্বদা নিজের দ্বীনী বা দুনিয়াবী প্রয়োজন এবং আল্লাহর জিকির এবং নিজের পাপের চিন্তায় নিজেকে রত রাখুন । ১১.সৃষ্টির অধিকার নষ্ট করা : আমরা বেদনার সাথে লক্ষ্য করি যে ধার্মিক মানুষদের মধ্যে অনেকেই অন্যের অধিকার নষ্ট করার কঠিন পাপে লিপ্ত থাকেন। হয়তো তাহাজ্জুদ, জিকির, নফল সিয়াম, দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও প্রচারে রত রয়েছেন কিন্তু স্ত্রী-সন্তান,প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, কর্মস্থল, সেবাগ্রহণে আগত ব্যক্তি, কর্মদাতা, অন্য অনেকের অধিকার নষ্ট করে। এ বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এর পরের পর্বে আরো কয়েকটি বড় বড় গোনাহ নিয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

১২ আগস্ট ২০২২,চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৬ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৫ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের পাঁচটি পার্টে ১১ টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। আল্লাহর পথে পথিকদের পাপগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম। ১২.গীবত: গীবত ১০০% সত্য কথা। কোনো ব্যক্তির ১০০% সত্য দোষত্রুটির কথা তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করার নামই গীবত। মুমিনের পুণ্য বিনষ্ট করার অন্যতম কারণ গীবত। ধার্মিক মানুষদের পতনের অন্যতম কারণ গীবত। সমাজের অধিকাংশ ধার্মিক, আলিম, যাকির, আবিদ, ইসলামের দাওয়াত, তাবলীগ, আন্দোলন ইত্যাদিতে নিয়োজিত ধর্মপ্রাণ মুসলিম সকলেই এই কঠিন বিধ্বংসী পাপে লিপ্ত হয়ে পড়ি। কুরআন কারীমে বা সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবে গীবতকে কোনো অবস্থায় হালাল বলা হয় নি। শুধু কোনো মানুষ বা জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করার একান্ত প্রয়োজনে তা বৈধ হতে পারে বলে আলিমগণ মত প্রকাশ করেছেন। গীবত ও শূকরের মাংসের মধ্যে দুটি পার্থক্য। প্রথম পার্থক্য শূকরের মাংস যে প্রয়োজনে খাওয়া যেতে পারে তা কুরআনেই বলা হয়েছে, পক্ষান্তরে গীবতের ক্ষেত্রে অনুরূপ কিছু কুরআন বা সহীহ হাদীসে বলা হয়নি। দ্বিতীয় পার্থক্য, সাধারণভাবে শূকরের মাংস ভক্ষণ করা শুধুমাত্র আল্লাহর হক্ক জনিত পাপ। সহজেই তাওবার মাধ্যমে তা ক্ষমা হতে পারে। পক্ষান্তরে গীবত বান্দার হক্ক জনিত পাপ। এর ক্ষমার জন্য সংশিলষ্ট ব্যক্তির ক্ষমা প্রয়োজন। এজন্য মুমিনের দায়িত্ব বিভিন্ন অজুহাতে বা যয়ীফ-মাউযূ হাদীসের বরাত দিয়ে এই পাপে লিপ্ত না হয়ে যথাসাধ্য একে বর্জন করা। গীবতের ফলে মুমিনের মনে অহংকার জন্ম নেয়, যা আখেরাতের ধ্বংসের অন্যতম কারণ। ১৩.নামীমাহ বা চোগলখুরী গীবতের আরেকটি পর্যায় ‘নামীমাহ’, ‘চোগলখুরী’ অর্থাৎ কানভাঙ্গানো বা কথা লাগান। একজনের কাছে অনুপস্থিত কারো কোনো দোষত্রুটি আলোচনা গীবত। আর যদি এমন দোষত্রুটি আলোচনা করা হয় যাতে দুই ব্যক্তি মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয় তাহলে তাকে আরবীতে ‘নামীমাহ’ বলা হয়। এটি গীবতের চেয়েও মারাত্মক অপরাধ ও জঘন্যতম কবীরা গোনাহের একটি। সত্য কথা লাগানোও নামীমাহ। মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য মিথ্য কথা বলা জায়েয, কিন্তু সম্পর্ক নষ্টকারী সত্য কথা জায়েয নয়। ১৪. রিয়া: মুমিন তার সকল কর্ম কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করবেন। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে দেখানোর জন্য বা কারো নিকট থেকে প্রশংসা, সম্মান বা পুরস্কার লাভের জন্য কর্ম করাকে ‘রিয়া’ বলা হয়। বাংলায় আমরা একে ‘প্রদর্শনেচ্ছা’ বলতে পারি। মুমিনের সকল ইবাদত ধ্বংস করার ও তাকে জাহান্নামী বানানোর জন্য শয়তানের অন্যতম ফাঁদ এই ‘রিয়া’। রিয়া থেকে আত্মরক্ষার জন্য মুমিনের চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব সকল নফল ইবাদত গোপনে করা। রিয়ার অন্যতম কারণ সমাজের মানুষদের কাছে সম্মান, মর্যাদা বা প্রশংসার আশা। আমাদের খুব ভালভাবে বুঝতে হবে যে, দুনিয়ায় কোনো মানুষই কিছু দিতে পারে না। দুনিয়ার সম্মান, মর্যাদা ও প্রতিপত্তি একটি কঠিন বোঝা ও ফিতনা ছাড়া কিছুই নয়। ১৫.ঝগড়া-তর্ক: আল্লাহর পথের পথিক বা ধার্মিক মানুষদের জন্য শয়তানের একটি ফাঁদ ঝগড়া ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়া। তথ্য ভিত্তিক আলোচনা বা মত-বিনিময় জ্ঞান বৃদ্ধি করে। আর ঝগড়া-তর্ক জ্ঞান গ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দেয়। ১৬.আত্মশুদ্ধিমূলক মানসিক ও দৈহিক কর্ম -জাগতিক জীবনের অস্থায়িত্ব স্মরণ ইসলামে বৈরাগ্য বা সমাজ বিচ্ছিন্ন জীবন নিষিদ্ধ। সমাজের মধ্যে বসবাস করে, সকল কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করার সাথে সাথে নিজের হৃদয়কে মোহমুক্ত রাখায় ইসলামী বৈরাগ্য। আর এই অবস্থা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম প্রতিনিয়ত এই জাগতিক জীবনের অস্থায়িত্ব, মৃত্যু ও মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কথা নিজেকে স্মরণ করানো। আমাকে তো আমার প্রভুর কাছে একাকীই চলে যেতে হবে। আমার তো বাস্তব্বাদী হওয়া উচিত। নিজের জাগতিক ও পরকালীন জীবনের জন্য যে কাজে আমার রব খুশি সেই কাজই তো আমার করা উচিত। -সৃষ্টির কল্যাণে রত থাকা আল্লাহর রহমত, বরকত ও সাওয়াব অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি, বিশেষত মানুষের প্রতি কল্যাণ ও উপকারের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। -হিংসা-মুক্ত কল্যাণ কামনা প্রয়োজনে নিজের হক্ক রক্ষার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তবে অধিকার আদায়ের চেষ্টা বা কর্ম আর মনের হিংসা ও শত্রুতা এক নয়। এক ব্যক্তি আমার অধিকার নষ্ট করেছেন, আমি তার নিকট থেকে আমার অধিকার আদায়ের চেষ্টা করছি। কিন্তু তার সাথে আমার অন্য কোনো শত্রুতা নেই। আমি আমার অধিকার ফেরৎ পাওয়া ছাড়া তার কোনো প্রকার অমঙ্গল কামনা করি না। বরং আমি সর্বদা তার জন্য দু‘আ করি। -আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণ মন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সহজেই অত্যন্ত বেশি সাওয়াব অর্জনের অন্যতম মাধ্যম সবর বা ধৈর্যধারণের গুণ অর্জন করা। ধৈর্য মুমিনের জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধৈর্য বলতে নিষ্ক্রিয় নির্জীবতা বুঝানো হয় না, বরং সক্রিয় আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বুঝানো হয়। পারিপার্শিক অবস্থা বা অন্যের আচরণ দ্বারা নিজের আচরণ প্রভাবিত না করে নিজের স্থির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নিজেকে পরিচালিত করার ক্ষমতা। এক কথায় Re-active না হয়ে Pro-active হওয়া। ধৈর্য হলো কর্মময় স্থিরচিত্ততা ও হতাশামুক্ত সুদৃঢ় মনোবল। মুমিন দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজের কল্যাণ ও স্বার্থ অর্জনের জন্য চেষ্টা করবেন। বিপদে আপদে কখনোই অতীতের ভুলভ্রান্তি নিয়ে হতাশা বা আফসোস করে সময় নষ্ট করবেন না বা মনের মধ্যে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও হতাশার অনুপ্রবেশের দরজা খুলে দিবেন না। বরং যা ঘটার আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটেছে এই বিশ্বাস নিয়ে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে কর্মের পথে এগোতে হবে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে ধৈর্য তিন প্রকারের: (১) বিপদ-আপদ ও কষ্টে ধৈর্য, (২) পাপ ও লোভ থেকে ধৈর্য এবং (৩) ক্রোধের মধ্যে ধৈর্য। বিপদে হতাশ বা অধৈর্য হয়ে পড়া একদিকে যেমন ঈমানের পরিপন্থী, অপরদিকে তা মানবীয় ব্যক্তিতেরব চরম পরাজয়। হতাশা, অস্থিরতা বা উৎকণ্ঠা বিপদ দূর করেনা, বিপদের কষ্ট কমায় না বা বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ দেখায় না। সর্বোপরি হতাশা বা ধৈর্যহীনতা স্বয়ং একটি কঠিন বিপদ যা মানুষকে আরো অনেক কঠিন বিপদের মধ্যে নিপতিত করে। পক্ষান্তরে ধৈর্য বিপদ দূর না করলেও তা বিপদ নিয়ন্ত্রণ করে, বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য শান্তভাবে চিন্তা করার সুযোগ দেয় এবং অস্থিরতা জনিত অন্যান্য বিপদের পথরোধ করে। সর্বোপরি বিপদে কষ্টে ধৈর্যের মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর নিকট মহান মর্যাদা, সাওয়াব, জাগতিক বরকত ও পারলৌকিক মুক্তি অর্জন করেন। -আল্লাহর প্রতি সু-ধারণা পোষণ অন্তরের একটি সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আল্লাহর সু-ধারণা পোষণ করা ও সর্বদা আল্লাহর রহমতের আশায় হৃদয়কে ভরপুর রাখা। যত কঠিন বিপদ বা সমস্যাই আসুক না কেন, মুমিনের হৃদয়ে অবিচল আস্থা থাকে যে, তার করুণাময় দয়াময় প্রতিপালক তাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন এবং তার জন্য যা কল্যাণকর তারই ব্যবস্থা করবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি অবিচল আস্থার সামান্যতম ঘাটতি ঈমানেরই ঘাটতি। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, হতাশা বা অবসাদে আক্রান্ত হওয়া অবিশ্বাসেরই নামান্তর। ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা ও দুশ্চিন্তা শয়তানের বিদ্যালয়ের অন্যতম পাঠ্য। আমরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারব যে, আমাদের অধিকাংশ দুশ্চিন্তাই ভবিষ্যতকে নিয়ে অমূলক দুশ্চিন্তা। রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ সময়েই আমরা খারাপ পরিণতির কথা চিন্তা করে হতাশা ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই। ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সমাজিক যে কোনো প্রকৃত বা সাম্ভাব্য সমস্যাকে নিয়ে আমাদের চিন্তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খারাপ দিকটা নিয়েই আবর্তিত হয়। অথচ সকল অবস্থায় ভাল চিন্তা করা, আল্লাহর রহমতে সকল বিপদ কেটে যাবেই এইরূপ সুদৃঢ় আশা পোষণ করা মুমিনের ঈমানের দাবী এবং আল্লাহর অন্যতম ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ। যে বান্দা রহমতের আশা করতে পারেন না তিনি তো আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করতে পারলেন না। আর আল্লাহ তো বান্দার ধারণা ও আস্থা অনুসারেই তার প্রতি ব্যবহার করবেন। সাম্ভাব্য বিপদের ক্ষেত্রে তো নয়ই, প্রকৃত বিপদের ক্ষেত্রেও মু’মিন কখনোই হতাশ হন না। -কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি শোকর অর্থ কৃতজ্ঞতা, রিদা অর্থ সন্তুষ্টি এবং কানা‘আত অর্থ স্বল্পে তুষ্টি। এই তিনটি কর্মে মুমিনের মনকে অনুশীলন করতে হবে। এগুলি দুনিয়া ও আখিরাতের অনন্ত নিয়ামতের উৎস। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অগণিত নেয়ামত রয়েছে। আবার অনেক কষ্টও রয়েছে। মানুষের একটি বড় দুর্বলতা আনন্দের কথা তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া ও কষ্ট বেদনার কথা বারংবার স্মরণ করা। এই দুর্বলতা কাটাতে হবে। জীবনের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই ইতিবাচক হতে হবে। আমরা কখনোই কষ্ট ও অসুবিধাগুলিকে বড় করে দেখব না। কষ্টের কথা বারংবার মনে করে জাবর কাটব না। বরং আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত, শান্তি, সুখ বারংবার স্মরণ করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব। এই ইতিবাচক ও কৃতজ্ঞতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করা মানব জীবনের শ্রেষ্টতম সম্পদ। এই দৃষ্টিভঙ্গি যে কোনো মানুষের জীবনকে অনন্ত শান্তি ও পরিতৃপ্তিতে ভরে দেয়। কষ্টের অনুভুতিকে ক্রমান্বয়ে কৃতজ্ঞতার অনুভুতিতে রূপান্তরিত করতে হবে। আল্লাহর অগনিত নিয়ামতের মধ্যে কিছু কষ্টের কারণে যদি গোনাহ ক্ষমা হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় তাহলে অসুবিধা কী? দুনিয়ায় প্রতিটি মানুষের জীবনেই বিপদাপদ ও অসুবিধা আসে। কাজেই আমার জীবনে তো কিছু অসুবিধা থাকবেই। বিপদ ও সমস্যা তো আরো কঠিন হতে পারত। অনেকের জীবনেই তো আমার চেয়েও অধিক কষ্ট আছে। কাজেই আমার হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জীবনের সকল আনন্দ, সুখ, খুশি, লাভ, পুরস্কার ইত্যাদি সকল নিয়ামতের কথা প্রসঙ্গ ও সুযোগ পেলে অন্যদেরকে বলতে হবে। আমরা সাধারণত সুখের বা আনন্দের কথার চেয়ে দুঃখের কথা বলতে বেশি আগ্রহী। আমাদেরকে এর বিপরীত বলার অভ্যাস আয়ত্ব করতে হবে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার দাবি, বান্দার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। যদি কোনো ব্যক্তি আমাদের প্রতি সামান্যতম সহযোগিতা করেন তবে আমাদের দায়িত্ব, তার প্রতি পরিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। সম্ভব হলে তাকে প্রতিদান দেওয়া। না হলে তার জন্য দু‘আ করা এবং তার উপকারের কথা অকপটে সকলের কাছে স্বীকার করা ও বলা। -নির্লোভতা যুহদ অর্থ নির্লোভতা, নির্লিপ্ততা, বৈরাগ্য ইত্যাদি। ইসলামে সন্ন্যাস বা সংসারত্যাগের বৈরাগ্য নিষিদ্ধ। সাংসারিক ও সামাজিক জীবনের মধ্যে অবস্থান করে জাগতিক সম্পদ ও সম্মানের লোভ থেকে হৃদয়কে বিমুক্ত রাখতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সচ্ছলতা, অসচ্ছলা, সম্মান ও অসম্মান সকল অবস্থায় হৃদয়ের অবস্থা এক থাকাই ইসলামী বৈরাগ্য। -আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) প্রেম আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-কে অন্য সকল কিছু এবং নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসতে হবে। এবং আল্লাহর ওয়াস্তে সকল মুমিনকে ভালবাসতে হবে। ভালবাসা অর্জনের অন্যতম উপায় সাহচার্য ও অনুকরণ। সাহাবীগণ এভাবেই সত্যিকারের নবীপ্রেম অর্জন করতে পেরেছিলেন। পরবর্তী কালের নবীপ্রেমিকগণ দৈহিক সাহচার্য না পেলেও সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর রেখে যাওয়া কুরআন ও হাদীস পাঠ, তাঁর ও তাঁর সহচরদের জীবনী পাঠ ও আলোচনার মাধ্যমে তাঁর রুহানী সাহচার্য লাভ করে তাঁর ভালবাসা অর্জন করেছিলেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরই হুবহু অনুকরণ ও অনুসরণ করে হৃদয়ের মধ্যে এই ভালবাসাকে চিরস্থায়ী ও পরিপূর্ণ করেছিলেন তাঁরা। আমাদেরও এপথে এগোতে হবে। নবীর (সা.) সকল উম্মাতকে ভালবাসা নবী-প্রেমের অংশ। যার মধ্যে তাঁর আনুগত্য, অনুসরণ ও অনুকরণ যত বেশি তার প্রতি মুমিনের প্রেমও তত বেশি। আল্লাহর ওয়াস্তে এই ভালবাসা। দল, মত, পাওনা, দেনা ইত্যাদি কারণে তা বাড়ে না বা কমে না। বরং দীন পালনের কারণে তা বাড়ে-কমে। -সুন্দর আচরণ সুন্দর আচরণের তিনটি দিক রয়েছে। প্রথমত: কথা ও আচরণের ক্ষেত্রে বিনম্রতা, প্রফুল্ল চিত্ত, হাস্যোজ্জ্বল মুখ, সত্য পরায়ণতা, কম কথা বলা ও বেশি শ্রবণ করা। দ্বিতীয়ত, কোনো কারণে ক্রোধান্বিত হলে গালি গালাজ, অভিশাপ ও সীমালঙ্ঘণ বর্জন করা। তৃতীয়ত, ক্ষমা করা, বিশেষত প্রতিশোধ নেওয়া বা প্রতিউত্তর দেওয়ার ক্ষমতা থাকলে ক্ষমা করে দেওয়া। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ https://www.rokomari.com/book/75371/rahe-belayat

 

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

১৯ আগস্ট ২০২২,চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৭ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৬ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের ৬ টি পার্টে ১৬ টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। সালাত ও বেলায়েত অধ্যায় থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ। ১৭.সালাত ও জামাতের গুরুত্ব সালাত: --সালাতই সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির এবং সালাতই মুমিনের বেলায়াতের অন্যতম পথ। আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সরাসরি ও সর্বোচ্চ সংযোগ। মনোযোগ পূর্ণ সালাত হৃদয়কে প্রশান্তিতে পরিপূর্ণ করে, হৃদয়ের অস্থিরতা, কষ্ট, রাগ, বিদ্বেষ ইত্যাদি দূর করে। --ঈমানের পরে মুসলিমের সবচেয়ে বড় করণীয় নিয়মিত সালাত আদায় করা। নামায পরিত্যাগকারী কখনোই মুসলিম বলে গণ্য হতে পারে না। যে ব্যক্তি মনে করে যে নামাজ না পড়লেও চলে বা কোন নামাজীর চেয়ে কোনো বেনামাজী ভালো হতে পারে সে ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে কাফের। প্রসিদ্ধ চার ইমাম সহ মুসলিম উম্মাহর সকল ইমাম ও ফকীহ এ বিষয়ে একমত। জামাত: --ওমর রা: বলেন সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ার চেয়ে ফজরের সালাত জামাতে আদায় করাকে আমি বেশি ভালোবাসি ও ভালো মনে করি। --নিয়মিত জামাতে সালাত আদায় করতে পারা মুমিনের অন্যতম কারামত। আউলিয়ায়ে কেরাম জামাতে সালাত আদায়কে বেলায়াতের পরিচয় মনে করেছেন। তারা বারবার বলেছেন যদি কাউকে পানির উপর দিয়ে হেঁটে যেতে, বাতাসে উড়ে যেতে দেখো তাহলে তাকে ওলী ভেবো না কিন্তু যদি কাউকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ঠিকমতো জামাতে আদায় করতে দেখো তাহলে তাকে ওলী জানবে। --রাসূল সা: নিজে এবং সাহাবীগণ কখনোই কঠিন ওজর ছাড়া জামাত ত্যাগ করেননি জামাতে অনুপস্থিত থাকাকে তারা নিশ্চিত মুনাফিকের পরিচয় বলে জানতেন। যারা জামাতে শরিক হয় না রাসুল সা: তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। ১৮.কয়েকটি ফিকহী মতভেদ ও বিদআত ঝগড়া: সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় হস্তদ্বয় রাখার স্থান, সূরা ফাতিহার পর আমীন বলার ক্ষেত্রে আস্তে বা জোরে বলা, রুকুতে যাওয়ার, রুকুতে থেকে ওঠার এবং তৃতীয় রাকাতে ওঠার সময় হস্তদ্বয় উত্তোলন করা, সাজদা করার সময় এবং উঠে দাঁড়ানোর সময় হাঁটু অথবা হাত আগে নামানো বা উঠানো, দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাকাতে দাঁড়ানোর আগে সামান্য বসা, শেষ বৈঠকে বসার সময় ডান পায়ের বা নিতম্বের উপর বসা,নারী ও পুরুষের সালাত পদ্ধতির পার্থক্য, জামাতে সালাত এর ক্ষেত্রে ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কোরআন পাঠ, সালাতুল ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর, সালাতুল জানাযা সুরা ফাতেহা পাঠ ও সালাতুল বিতর পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে মতভেদ বিদ্যমান। লক্ষণীয়: -প্রতিটি বিষয়ে উভয় মতের পক্ষে হাদিস বিদ্যমান। -সাহাবী তাবিয়ীগণ ও ইমামগণ এগুলোর ক্ষেত্রে একটি কর্মকে উত্তম বলেছেন কিন্তু বিপরীত কর্মকে কখনই নিষিদ্ধ বলেননি। -তারা এগুলো নিয়ে মতভেদ করেছেন, নিজের পক্ষে প্রমাণ পেশ করেছেন, কিন্তু কখনোই ভিন্নমতের অনুসারীকে অবজ্ঞা করেননি। -মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা পাঠ ছাড়া অন্য সকল বিষয়ের মতভেদ নফল মুস্তাহাব বা উত্তম অনুত্তম পর্যায়ের। -বর্তমানে ধার্মিক মুসলিমগণ একে অপরকে এ বিষয়গুলো নিয়ে অবজ্ঞা,উপহাস, অবমূল্যায়ন ও ভয়ঙ্কর শত্রুতায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। যারা সহিহ হাদিস পালন করতে চান তাদের অন্তর সহিহ হাদিস অনুসারে প্রশস্ত হওয়া জরুরী। যে সকল বিষয়ে একাধিক সহিহ বা হাসান হাদিস বিদ্যমান সে সকল বিষয়ে ভিন্নমত কে কটাক্ষ করার অর্থ রাসূল সা: সাহাবীগণের প্রমাণিত সুন্নাহকে কটাক্ষ করা। সহীহ হাদীসকে সহীহভাবে পালন করা প্রয়োজন। রাসূল সা: যে কর্মকে যতটুকু গুরুত্ব দিয়েছেন তার চেয়ে বেশি বা কম গুরুত্ব দেয়া বিদআতের পথ। ১৯.আল্লাহর জিকিরের জন্য সালাত: -আল্লাহর স্মরণ ও তার কাছে প্রার্থনার মাধ্যমে হৃদয়কে পবিত্র, পরিশুদ্ধ, আবিলতা মুক্ত ও ভার মুক্ত করার জন্য সালাত। -আল্লাহর স্মরণ বা জিকির হলো সালাতের মূল বিষয়। হৃদয়হীন স্মরণহীন নামাজ মুনাফিকের নামাজ। -দুঃখজনক বিষয় হলো আমরা নামাজের অন্যান্য প্রয়োজনীয়, অল্প প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় অনেক বিষয়ে সচেতন হলেও মনোযোগ, আবেগ ও ভক্তির বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায় না। ২০.সালাতের অন্যান্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় : -রাসূল সা: এর শেখানো পদ্ধতি অনুসারে আমাদের সালাত আদায় করতে হবে। -মুমিনের উচিত মহান প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পছন্দনীয় পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি পোশাক পরিধান করা। -নামাজের সবকিছু হৃদয় দিয়ে অনুভব করে ও বুঝে পাঠ করতে হবে, না বুঝে আন্দাজে বা অমনোযোগের সাথে নয়। -ফরজ নফল সকল সালাতের মধ্যে কোরআনের দোয়া বা কুরআনের অর্থবোধক দোয়া পাঠ করাকে ইমাম আবু হানিফা সুন্দর বা উত্তম বলেছেন। সুন্নত নফল তাহাজ্জুদ ইত্যাদি সালাতের শুরুতে, তেলাওয়াতের সময়ে, রুকুতে, সেজদায় ও তাশাহুদের পরে বেশি বেশি করে দোয়া করতে হবে। -সকল সুন্নত নফল নামাজ মসজিদে আদায় করা জায়েজ কিন্তু বাড়িতে পালন করা উত্তম। -আমরা সাধারণত এশার সালাতের সাথে বিতির আদায় করি এতে দোষ নেই তবে যারা শেষ রাতে উঠতে পারবেন না তাদের উচিত রাত ১০টা বা ১১ টায় ঘুমাতে যাওয়ার সময় সম্ভব হলে কয়েক রাকাত নফল আদায় করে বিতির আদায় করা। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ https://www.rokomari.com/book/75371/rahe-belayat

 

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৮ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৭ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের ৭ টি পার্টে ২০ টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। যিকর ও বেলায়েত অধ্যায় থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ। ২১.যিকর, বেলায়াত ও আত্মশুদ্ধি কোনো প্রকারে মনে, মুখে, অন্তরে, কর্মের মাধ্যমে, চিন্তার মাধ্যমে, আদেশ পালন করে বা নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর নাম, গুণাবলী, বিধিবিধান, তাঁর পুরস্কার, শাস্তি ইত্যাদি স্মরণ করা বা করানোকে ইসলামের পরিভাষায় যিকর বা আল্লাহর যিকর বলা হয়। তবে কুরআন ও সুন্নাহে ‘যিকর’ বলতে সাধারণভাবে কোনো না কোনোভাবে মুখের ভাষায় ‘আল্লাহর স্মরণ’ করাকে বুঝানো হয়। বেলায়াতের পথের কর্ম দুই পর্যায়ের: ফরয ও নফল। নফল পর্যায়ের যিকরকে বেলায়াতের পথে অন্য সকল নফল ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে হাদীস শরীফে। সর্বোপরি, আত্মশুদ্ধির জন্য কুরআন-হাদীসে যিকরের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ২২.যিকরের পরিচয়ে অস্পষ্টতা প্রথমত, অনেক সময় অনেক আবেগী ধার্মিক মানুষ তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদি শাব্দিক যিকরের প্রতি অবজ্ঞা করে বলেন যে, ‘আল্লাহর হুকুম মানাই তো বড় যিকর ... ’ ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, অনেক সময় অনেক ধার্মিক মানুষ যিকর বলতে শুধুমাত্র তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদি শাব্দিক যিকরই বুঝেন। তিনি মনে করেন এ সকল যিকর না করে যিনি আল্লাহর বিধানাবলী সাধ্যমত পালন করেন তিনি কখনই যাকির নন। উপরন্তু অনেকে আল্লাহর ফরয বিধানাবলী - সালাত, সিয়াম, যাকাত, ইত্যাদি যথাযথ পালন না করে শুধুমাত্র কিছু সুন্নাত-সম্মত অথবা বিদ’আত পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত ‘যিকর’ নামক কর্ম করে নিজেকে যাকির বলে দাবি করেন বা মনে করেন। তৃতীয়ত, অনেক ধার্মিক ও যাকির মানুষ ‘আল্লাহর যিকর’ বা ‘আল্লাহর নামের যিকর’ বলতে সুন্নাত সম্মত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের আচরিত যিকর না বুঝে সমাজে প্রচিলত বিভিন্ন বানোয়াট পদ্ধতির বানোয়াট যিকর বুঝেন। তাঁরা আল্লাহর যিকরের ফযীলতের আয়াত ও হাদীসগুলি গ্রহণ করেন। কিন্তু এগুলির পালনের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের সুন্নাত নিয়ে মাথা ঘামান না। কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফের আলোকে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহর যিকর বা মহান রাব্বুল আ’লামীনের স্মরণই মূলত ইসলাম। মুমিনের সকল কর্মই তো তার প্রতিপালক রাব্বুল আ’লামীনকে কেন্দ্র করে ও তাঁকেই স্মরণ করে। কাজেই, তার সকল কর্মই যিকর। কুরআন ও হাদীসে এভাবে আমরা যিকরকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত দেখতে পাই। ঈমান, কুরআন, সালাত, সিয়াম, হজ্ব ইত্যাদি সকল প্রকার ইবাদতকেই যিকর বলা হয়েছে। আবার এগুলির অতিরিক্ত তাকবীর, তাহলীল, তাসবীহ, দু‘আ ইত্যাদিকেও যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীসের এ সকল ব্যবহারের আলোকে আমরা যিকরকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করতে পারিঃ --যে সকল ফরয বা নফল ইবাদতের ইসলামে অন্য ব্যবহারিক নাম রয়েছে, তবে যেহেতু সকল ইবাদতের মূলই আল্লাহর স্মরণ, এজন্য সেগুলিকেও যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। --যে সকল ফরয বা নফল ইবাদত শুধুমাত্র যিকর নামেই অভিহিত এবং অন্যান্য সকল ইবাদতের অতিরিক্ত শুধুমাত্র আল্লাহর স্মরণের জন্য পালন করা হয়। ২৩. ব্যাপক অর্থে যিকর --আল্লাহর আনুগত্যমূলক সকল কর্ম ও বর্জনই যিকর তাবেয়ী সাঈদ বিন জুবাঈর বলেনঃ “আল্লাহর আনুগত্যই আল্লাহর যিকর। যে তাঁর আনুগত্য করল সে তাঁর যিকর করল। আর যে আল্লাহর আনুগত্য করল না বা তাঁর বিধিনিষেধ পালন করল না, সে যত বেশিই তাসবীহ পাঠ করুক আর কুরআন তিলাওয়াত করুক সে ‘যাকির’ হিসাবে গণ্য হবে না। তাবেয়ী বিলাল ইবনু সা’দ বলেন : ‘যিকর দুই প্রকার। প্রথম প্রকার জিহ্বার যিকর - এই যিকর ভালো। দ্বিতীয় প্রকার যিকর - হালাল-হারাম ও বিধিনিষেধের যিকর। সকল কর্মের সময় আল্লাহর আদেশ নিষেধ মনে রাখা। এই যিকর সর্বোত্তম।’ --সালাত আল্লাহর যিকর সকল প্রকার ইবাদতের মধ্য থেকে সালাতকে বিশেষভাবে যিকর হিসাবে কুরআন করীমে উল্লেখ করা হয়েছে। --হজ্বও আল্লাহর যিকর ‘জামারা কঙ্কর নিক্ষেপ করা ও সাফা মারওয়ার মধ্যে সাঈ করার বিধান দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহর যিকর প্রতিষ্ঠার জন্য। --ওয়ায-নসীহত আল্লাহর যিকর কাউকে কোনোভাবে আল্লাহর নাম, গুণাবলী, বিধান বা আল্লাহর সহিত সম্পর্কিত যে কোনো বিষয় স্মরণ করানোকে বিশেষভাবে কুরআন করীম ও হাদীস শরীফে যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। --কুরআন ‘আল্লাহর যিকর’ ও ‘আল্লাহর নামের যিকর কুরআন কারীমের অন্যতম নাম ‘যিকর’ ও ‘আল্লাহর যিকর’। কুরআনই যিকর, কুরআনই ওয়ায, কুরআনই উপদেশ। --আল্লাহর নাম জপ করার যিকর আল্লাহর নামের গুণগান বারংবার উচ্চারণ বা ‘জপ’ করাকে বিশেষভাবে কুরআন ও সুন্নাহে “আল্লাহর যিকর” বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন, হাদীস, উসূলুল ফিকহ, ফিকহ, তাসাউফ সকল ক্ষেত্রে বা এককথায় ইসলামী পরিভাষায় সাধারণভাবে ‘যিকর’, ‘আল্লাহর যিকর’, ‘আল্লাহর নামের যিকর’ ইত্যাদি বলতে এই প্রকারের যিকর বুঝানো হয়। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ https://www.rokomari.com/book/75371/rahe-belay

 

শয়তানের কার্যক্রম

শয়তানের উপর কোরআনের  আয়াত ও হাদিস

ডক্টর উমর সুলায়মান আল আশকার এর লেখা বই(মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক) সহ কয়েকটি বই এবং আলেমদের বক্তব্য থেকে কয়েকটি পয়েন্ট আনার চেষ্টা করেছি।

শয়তান মানবজাতির জন্য অনেক বড় একটি ফিতনা ও কেয়ামত পর্যন্ত চলমান এক যুদ্ধের সেনাপতি ।তাই কোরআনে তার ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে আমাদের সাবধান করা হয়েছে।

اِنَّ الشَّيْطٰنَ لَـكُمْ عَدُوٌّ فَا تَّخِذُوْهُ عَدُوًّا ۗ اِنَّمَا يَدْعُوْا حِزْبَهٗ لِيَكُوْنُوْا مِنْ اَصْحٰبِ السَّعِيْرِ

"শয়ত্বান তোমাদের শত্রু, কাজেই তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর। সে কেবল তার দলবলকে ডাকে, যাতে তারা জ্বলন্ত অগ্নির সঙ্গী হয়।"
( Fatir 35: Verse 6)

قَا لَ فَبِعِزَّتِكَ لَاُ غْوِيَنَّهُمْ اَجْمَعِيْنَ
"সে বলল- আপনার ক্ষমতার কসম! আমি ওদের সব্বাইকে অবশ্যই পথভ্রষ্ট করব।"
(Sad 38: Verse 82)

ثُمَّ لَاٰ تِيَنَّهُمْ مِّنْۢ بَيْنِ اَيْدِيْهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ اَيْمَا نِهِمْ وَعَنْ شَمَآئِلِهِمْ ۗ وَلَا تَجِدُ اَكْثَرَهُمْ شٰكِرِيْنَ

"তারপর আমি তাদের সামনে দিয়ে, তাদের পেছন দিয়ে, তাদের ডান দিয়ে, তাদের বাম দিয়ে, তাদের কাছে অবশ্যই আসব, তুমি তাদের অধিকাংশকেই শোকর আদায়কারী পাবে না।"
(Al-A'raf 7: Verse 17)

وَقَا سَمَهُمَاۤ اِنِّيْ لَـكُمَا لَمِنَ النّٰصِحِيْنَ

"সে শপথ করে তাদের বলল, ‘আমি তোমাদের সত্যিকারের হিতাকাঙ্ক্ষী।’"
(Al-A'raf 7: Verse 21)

শয়তানের কার্যক্রমের সামারি হলো সকল মন্দ কাজের আহ্বান জানায় এবং ভালো কাজে বাধা দেয়,

কোরআন ও হাদিসে শয়তানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, কর্মকৌশল বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য

-যা জান্নাত থেকে বঞ্চিত করা জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া

স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য

-কুফর ও শির্কে লিপ্ত করা
-গুনাহতে লিপ্ত করা
-মুমিনদের মাঝে ঘৃণা ও বিদ্বেষ তৈরি করা
-মন্দ ও অশ্লীল কাজ করানো এবং আল্লাহ সম্পর্কে না জেনে কথা বলা
-আল্লাহর আনুগত্যে বাধা প্রদান ও তার আনুগত্য করানো
-নেক আমল ধ্বংস করে দেওয়া
-মানসিক ও শারীরিক ভাবে মানুষের ক্ষতি করা

কৌশল সমূহ :
১.কোরআনের সাথে দুরুত্ত্ব তৈরি করা
২.খারাপ কাজকে সৌন্দর্য মন্ডিত করা (আদম আলাইহিস সালাম এর উদাহরণ)
৩.ভয় দেখায়
৪.সন্দেহ তৈরি করা
৫.নগ্নতার দিকে আহবান করে
৬.আল্লাহর স্মরন খেকে দুরে রাখা
৭. নামাজে মনোযোগ নষ্ট করা
৮.রাগ ও তাড়াহুড়া
৯.বিভেদ তৈরি করা
১০.দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি
১১.স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভেদ
১২.মিথ্যা কামনা বাসনা
১৩.মানবিক দুর্বল জায়গায় আক্রমণ
১৪. আল্লাহ সম্পর্কে না জেনে কথা বলা
১৫. মৃত্যুর সময় পথভ্রষ্ট করা
১৬.কাজে গড়িমসি ও অলসতা
১৭.শয়তান ধাপে ধাপে কাজ করে
১৮.কল্যাণকামী হিসেবে আসে

শয়তান থেকে রক্ষার হাতিয়ার

১.ঈমান ও তাকওয়াক্কুল
২.ইখলাস
৩.আল্লাহর কাছে আশ্রয়
৪.কোরআন তেলাওয়াত ও যিকির
৫.ওজু সালাত
৬.তওবা ইস্তেগফার
৭.ঘরকে শয়তানের উপকরন দুর করা
৮.পরিবারকে রক্ষা করা
৯.শয়তানের বিরোধীতা করা
১০.দৃষ্টি অবনত করা
১১.অপচয় রোধ করা
১২.সাবধানতা ও সতর্কতা

গভীর ইলম,ঈমান, শয়তানকে মোকাবেলা করা ও সরল পথে থাকার মত প্রচন্ড শক্তি না থাকলে এই চক্রান্ত থেকে পলায়ন করা অসম্ভব- ইবনুল কাইয়ুম।