Monday 19 September 2022

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৮ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৭ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের ৭ টি পার্টে ২০ টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। যিকর ও বেলায়েত অধ্যায় থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ। ২১.যিকর, বেলায়াত ও আত্মশুদ্ধি কোনো প্রকারে মনে, মুখে, অন্তরে, কর্মের মাধ্যমে, চিন্তার মাধ্যমে, আদেশ পালন করে বা নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর নাম, গুণাবলী, বিধিবিধান, তাঁর পুরস্কার, শাস্তি ইত্যাদি স্মরণ করা বা করানোকে ইসলামের পরিভাষায় যিকর বা আল্লাহর যিকর বলা হয়। তবে কুরআন ও সুন্নাহে ‘যিকর’ বলতে সাধারণভাবে কোনো না কোনোভাবে মুখের ভাষায় ‘আল্লাহর স্মরণ’ করাকে বুঝানো হয়। বেলায়াতের পথের কর্ম দুই পর্যায়ের: ফরয ও নফল। নফল পর্যায়ের যিকরকে বেলায়াতের পথে অন্য সকল নফল ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে হাদীস শরীফে। সর্বোপরি, আত্মশুদ্ধির জন্য কুরআন-হাদীসে যিকরের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ২২.যিকরের পরিচয়ে অস্পষ্টতা প্রথমত, অনেক সময় অনেক আবেগী ধার্মিক মানুষ তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদি শাব্দিক যিকরের প্রতি অবজ্ঞা করে বলেন যে, ‘আল্লাহর হুকুম মানাই তো বড় যিকর ... ’ ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, অনেক সময় অনেক ধার্মিক মানুষ যিকর বলতে শুধুমাত্র তাসবীহ, তাহলীল ইত্যাদি শাব্দিক যিকরই বুঝেন। তিনি মনে করেন এ সকল যিকর না করে যিনি আল্লাহর বিধানাবলী সাধ্যমত পালন করেন তিনি কখনই যাকির নন। উপরন্তু অনেকে আল্লাহর ফরয বিধানাবলী - সালাত, সিয়াম, যাকাত, ইত্যাদি যথাযথ পালন না করে শুধুমাত্র কিছু সুন্নাত-সম্মত অথবা বিদ’আত পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত ‘যিকর’ নামক কর্ম করে নিজেকে যাকির বলে দাবি করেন বা মনে করেন। তৃতীয়ত, অনেক ধার্মিক ও যাকির মানুষ ‘আল্লাহর যিকর’ বা ‘আল্লাহর নামের যিকর’ বলতে সুন্নাত সম্মত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের আচরিত যিকর না বুঝে সমাজে প্রচিলত বিভিন্ন বানোয়াট পদ্ধতির বানোয়াট যিকর বুঝেন। তাঁরা আল্লাহর যিকরের ফযীলতের আয়াত ও হাদীসগুলি গ্রহণ করেন। কিন্তু এগুলির পালনের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবীগণের সুন্নাত নিয়ে মাথা ঘামান না। কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফের আলোকে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহর যিকর বা মহান রাব্বুল আ’লামীনের স্মরণই মূলত ইসলাম। মুমিনের সকল কর্মই তো তার প্রতিপালক রাব্বুল আ’লামীনকে কেন্দ্র করে ও তাঁকেই স্মরণ করে। কাজেই, তার সকল কর্মই যিকর। কুরআন ও হাদীসে এভাবে আমরা যিকরকে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত দেখতে পাই। ঈমান, কুরআন, সালাত, সিয়াম, হজ্ব ইত্যাদি সকল প্রকার ইবাদতকেই যিকর বলা হয়েছে। আবার এগুলির অতিরিক্ত তাকবীর, তাহলীল, তাসবীহ, দু‘আ ইত্যাদিকেও যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীসের এ সকল ব্যবহারের আলোকে আমরা যিকরকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করতে পারিঃ --যে সকল ফরয বা নফল ইবাদতের ইসলামে অন্য ব্যবহারিক নাম রয়েছে, তবে যেহেতু সকল ইবাদতের মূলই আল্লাহর স্মরণ, এজন্য সেগুলিকেও যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। --যে সকল ফরয বা নফল ইবাদত শুধুমাত্র যিকর নামেই অভিহিত এবং অন্যান্য সকল ইবাদতের অতিরিক্ত শুধুমাত্র আল্লাহর স্মরণের জন্য পালন করা হয়। ২৩. ব্যাপক অর্থে যিকর --আল্লাহর আনুগত্যমূলক সকল কর্ম ও বর্জনই যিকর তাবেয়ী সাঈদ বিন জুবাঈর বলেনঃ “আল্লাহর আনুগত্যই আল্লাহর যিকর। যে তাঁর আনুগত্য করল সে তাঁর যিকর করল। আর যে আল্লাহর আনুগত্য করল না বা তাঁর বিধিনিষেধ পালন করল না, সে যত বেশিই তাসবীহ পাঠ করুক আর কুরআন তিলাওয়াত করুক সে ‘যাকির’ হিসাবে গণ্য হবে না। তাবেয়ী বিলাল ইবনু সা’দ বলেন : ‘যিকর দুই প্রকার। প্রথম প্রকার জিহ্বার যিকর - এই যিকর ভালো। দ্বিতীয় প্রকার যিকর - হালাল-হারাম ও বিধিনিষেধের যিকর। সকল কর্মের সময় আল্লাহর আদেশ নিষেধ মনে রাখা। এই যিকর সর্বোত্তম।’ --সালাত আল্লাহর যিকর সকল প্রকার ইবাদতের মধ্য থেকে সালাতকে বিশেষভাবে যিকর হিসাবে কুরআন করীমে উল্লেখ করা হয়েছে। --হজ্বও আল্লাহর যিকর ‘জামারা কঙ্কর নিক্ষেপ করা ও সাফা মারওয়ার মধ্যে সাঈ করার বিধান দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র আল্লাহর যিকর প্রতিষ্ঠার জন্য। --ওয়ায-নসীহত আল্লাহর যিকর কাউকে কোনোভাবে আল্লাহর নাম, গুণাবলী, বিধান বা আল্লাহর সহিত সম্পর্কিত যে কোনো বিষয় স্মরণ করানোকে বিশেষভাবে কুরআন করীম ও হাদীস শরীফে যিকর নামে অভিহিত করা হয়েছে। --কুরআন ‘আল্লাহর যিকর’ ও ‘আল্লাহর নামের যিকর কুরআন কারীমের অন্যতম নাম ‘যিকর’ ও ‘আল্লাহর যিকর’। কুরআনই যিকর, কুরআনই ওয়ায, কুরআনই উপদেশ। --আল্লাহর নাম জপ করার যিকর আল্লাহর নামের গুণগান বারংবার উচ্চারণ বা ‘জপ’ করাকে বিশেষভাবে কুরআন ও সুন্নাহে “আল্লাহর যিকর” বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন, হাদীস, উসূলুল ফিকহ, ফিকহ, তাসাউফ সকল ক্ষেত্রে বা এককথায় ইসলামী পরিভাষায় সাধারণভাবে ‘যিকর’, ‘আল্লাহর যিকর’, ‘আল্লাহর নামের যিকর’ ইত্যাদি বলতে এই প্রকারের যিকর বুঝানো হয়। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ https://www.rokomari.com/book/75371/rahe-belay

 

No comments:

Post a Comment