Monday, 19 September 2022

ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের কর্ম ও অবদান

১২ আগস্ট ২০২২,চলমান বুক রিভিউয়ে আজকে আল্লাহ আমাকে যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ। রিভিউ -৬ রাহে বেলায়াত বই পার্ট-৫ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের rokomari.com এ বিক্রিত বই গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বই হল রাহে বেলায়াত। আমি এই বইয়ে আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলোর ছোট্ট একটি সামারি দেওয়ার চেষ্টা করছি আলহামদুলিল্লাহ। আগের পাঁচটি পার্টে ১১ টি পয়েন্ট উল্লেখ করেছি,এই পার্ট পড়ার আগে ঐ পয়েন্ট গুলো পড়ার অনুরোধ করছি। আল্লাহর পথে পথিকদের পাপগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম। ১২.গীবত: গীবত ১০০% সত্য কথা। কোনো ব্যক্তির ১০০% সত্য দোষত্রুটির কথা তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করার নামই গীবত। মুমিনের পুণ্য বিনষ্ট করার অন্যতম কারণ গীবত। ধার্মিক মানুষদের পতনের অন্যতম কারণ গীবত। সমাজের অধিকাংশ ধার্মিক, আলিম, যাকির, আবিদ, ইসলামের দাওয়াত, তাবলীগ, আন্দোলন ইত্যাদিতে নিয়োজিত ধর্মপ্রাণ মুসলিম সকলেই এই কঠিন বিধ্বংসী পাপে লিপ্ত হয়ে পড়ি। কুরআন কারীমে বা সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবে গীবতকে কোনো অবস্থায় হালাল বলা হয় নি। শুধু কোনো মানুষ বা জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করার একান্ত প্রয়োজনে তা বৈধ হতে পারে বলে আলিমগণ মত প্রকাশ করেছেন। গীবত ও শূকরের মাংসের মধ্যে দুটি পার্থক্য। প্রথম পার্থক্য শূকরের মাংস যে প্রয়োজনে খাওয়া যেতে পারে তা কুরআনেই বলা হয়েছে, পক্ষান্তরে গীবতের ক্ষেত্রে অনুরূপ কিছু কুরআন বা সহীহ হাদীসে বলা হয়নি। দ্বিতীয় পার্থক্য, সাধারণভাবে শূকরের মাংস ভক্ষণ করা শুধুমাত্র আল্লাহর হক্ক জনিত পাপ। সহজেই তাওবার মাধ্যমে তা ক্ষমা হতে পারে। পক্ষান্তরে গীবত বান্দার হক্ক জনিত পাপ। এর ক্ষমার জন্য সংশিলষ্ট ব্যক্তির ক্ষমা প্রয়োজন। এজন্য মুমিনের দায়িত্ব বিভিন্ন অজুহাতে বা যয়ীফ-মাউযূ হাদীসের বরাত দিয়ে এই পাপে লিপ্ত না হয়ে যথাসাধ্য একে বর্জন করা। গীবতের ফলে মুমিনের মনে অহংকার জন্ম নেয়, যা আখেরাতের ধ্বংসের অন্যতম কারণ। ১৩.নামীমাহ বা চোগলখুরী গীবতের আরেকটি পর্যায় ‘নামীমাহ’, ‘চোগলখুরী’ অর্থাৎ কানভাঙ্গানো বা কথা লাগান। একজনের কাছে অনুপস্থিত কারো কোনো দোষত্রুটি আলোচনা গীবত। আর যদি এমন দোষত্রুটি আলোচনা করা হয় যাতে দুই ব্যক্তি মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হয় তাহলে তাকে আরবীতে ‘নামীমাহ’ বলা হয়। এটি গীবতের চেয়েও মারাত্মক অপরাধ ও জঘন্যতম কবীরা গোনাহের একটি। সত্য কথা লাগানোও নামীমাহ। মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য মিথ্য কথা বলা জায়েয, কিন্তু সম্পর্ক নষ্টকারী সত্য কথা জায়েয নয়। ১৪. রিয়া: মুমিন তার সকল কর্ম কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করবেন। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে দেখানোর জন্য বা কারো নিকট থেকে প্রশংসা, সম্মান বা পুরস্কার লাভের জন্য কর্ম করাকে ‘রিয়া’ বলা হয়। বাংলায় আমরা একে ‘প্রদর্শনেচ্ছা’ বলতে পারি। মুমিনের সকল ইবাদত ধ্বংস করার ও তাকে জাহান্নামী বানানোর জন্য শয়তানের অন্যতম ফাঁদ এই ‘রিয়া’। রিয়া থেকে আত্মরক্ষার জন্য মুমিনের চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব সকল নফল ইবাদত গোপনে করা। রিয়ার অন্যতম কারণ সমাজের মানুষদের কাছে সম্মান, মর্যাদা বা প্রশংসার আশা। আমাদের খুব ভালভাবে বুঝতে হবে যে, দুনিয়ায় কোনো মানুষই কিছু দিতে পারে না। দুনিয়ার সম্মান, মর্যাদা ও প্রতিপত্তি একটি কঠিন বোঝা ও ফিতনা ছাড়া কিছুই নয়। ১৫.ঝগড়া-তর্ক: আল্লাহর পথের পথিক বা ধার্মিক মানুষদের জন্য শয়তানের একটি ফাঁদ ঝগড়া ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়া। তথ্য ভিত্তিক আলোচনা বা মত-বিনিময় জ্ঞান বৃদ্ধি করে। আর ঝগড়া-তর্ক জ্ঞান গ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দেয়। ১৬.আত্মশুদ্ধিমূলক মানসিক ও দৈহিক কর্ম -জাগতিক জীবনের অস্থায়িত্ব স্মরণ ইসলামে বৈরাগ্য বা সমাজ বিচ্ছিন্ন জীবন নিষিদ্ধ। সমাজের মধ্যে বসবাস করে, সকল কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করার সাথে সাথে নিজের হৃদয়কে মোহমুক্ত রাখায় ইসলামী বৈরাগ্য। আর এই অবস্থা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম প্রতিনিয়ত এই জাগতিক জীবনের অস্থায়িত্ব, মৃত্যু ও মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কথা নিজেকে স্মরণ করানো। আমাকে তো আমার প্রভুর কাছে একাকীই চলে যেতে হবে। আমার তো বাস্তব্বাদী হওয়া উচিত। নিজের জাগতিক ও পরকালীন জীবনের জন্য যে কাজে আমার রব খুশি সেই কাজই তো আমার করা উচিত। -সৃষ্টির কল্যাণে রত থাকা আল্লাহর রহমত, বরকত ও সাওয়াব অর্জনের সবচেয়ে সহজ ও সংক্ষিপ্ত পথ আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি, বিশেষত মানুষের প্রতি কল্যাণ ও উপকারের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। -হিংসা-মুক্ত কল্যাণ কামনা প্রয়োজনে নিজের হক্ক রক্ষার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তবে অধিকার আদায়ের চেষ্টা বা কর্ম আর মনের হিংসা ও শত্রুতা এক নয়। এক ব্যক্তি আমার অধিকার নষ্ট করেছেন, আমি তার নিকট থেকে আমার অধিকার আদায়ের চেষ্টা করছি। কিন্তু তার সাথে আমার অন্য কোনো শত্রুতা নেই। আমি আমার অধিকার ফেরৎ পাওয়া ছাড়া তার কোনো প্রকার অমঙ্গল কামনা করি না। বরং আমি সর্বদা তার জন্য দু‘আ করি। -আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণ মন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সহজেই অত্যন্ত বেশি সাওয়াব অর্জনের অন্যতম মাধ্যম সবর বা ধৈর্যধারণের গুণ অর্জন করা। ধৈর্য মুমিনের জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধৈর্য বলতে নিষ্ক্রিয় নির্জীবতা বুঝানো হয় না, বরং সক্রিয় আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বুঝানো হয়। পারিপার্শিক অবস্থা বা অন্যের আচরণ দ্বারা নিজের আচরণ প্রভাবিত না করে নিজের স্থির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নিজেকে পরিচালিত করার ক্ষমতা। এক কথায় Re-active না হয়ে Pro-active হওয়া। ধৈর্য হলো কর্মময় স্থিরচিত্ততা ও হতাশামুক্ত সুদৃঢ় মনোবল। মুমিন দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজের কল্যাণ ও স্বার্থ অর্জনের জন্য চেষ্টা করবেন। বিপদে আপদে কখনোই অতীতের ভুলভ্রান্তি নিয়ে হতাশা বা আফসোস করে সময় নষ্ট করবেন না বা মনের মধ্যে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও হতাশার অনুপ্রবেশের দরজা খুলে দিবেন না। বরং যা ঘটার আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটেছে এই বিশ্বাস নিয়ে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং দৃঢ় মনোবল নিয়ে কর্মের পথে এগোতে হবে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে ধৈর্য তিন প্রকারের: (১) বিপদ-আপদ ও কষ্টে ধৈর্য, (২) পাপ ও লোভ থেকে ধৈর্য এবং (৩) ক্রোধের মধ্যে ধৈর্য। বিপদে হতাশ বা অধৈর্য হয়ে পড়া একদিকে যেমন ঈমানের পরিপন্থী, অপরদিকে তা মানবীয় ব্যক্তিতেরব চরম পরাজয়। হতাশা, অস্থিরতা বা উৎকণ্ঠা বিপদ দূর করেনা, বিপদের কষ্ট কমায় না বা বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ দেখায় না। সর্বোপরি হতাশা বা ধৈর্যহীনতা স্বয়ং একটি কঠিন বিপদ যা মানুষকে আরো অনেক কঠিন বিপদের মধ্যে নিপতিত করে। পক্ষান্তরে ধৈর্য বিপদ দূর না করলেও তা বিপদ নিয়ন্ত্রণ করে, বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য শান্তভাবে চিন্তা করার সুযোগ দেয় এবং অস্থিরতা জনিত অন্যান্য বিপদের পথরোধ করে। সর্বোপরি বিপদে কষ্টে ধৈর্যের মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর নিকট মহান মর্যাদা, সাওয়াব, জাগতিক বরকত ও পারলৌকিক মুক্তি অর্জন করেন। -আল্লাহর প্রতি সু-ধারণা পোষণ অন্তরের একটি সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আল্লাহর সু-ধারণা পোষণ করা ও সর্বদা আল্লাহর রহমতের আশায় হৃদয়কে ভরপুর রাখা। যত কঠিন বিপদ বা সমস্যাই আসুক না কেন, মুমিনের হৃদয়ে অবিচল আস্থা থাকে যে, তার করুণাময় দয়াময় প্রতিপালক তাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন এবং তার জন্য যা কল্যাণকর তারই ব্যবস্থা করবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি অবিচল আস্থার সামান্যতম ঘাটতি ঈমানেরই ঘাটতি। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, হতাশা বা অবসাদে আক্রান্ত হওয়া অবিশ্বাসেরই নামান্তর। ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা ও দুশ্চিন্তা শয়তানের বিদ্যালয়ের অন্যতম পাঠ্য। আমরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারব যে, আমাদের অধিকাংশ দুশ্চিন্তাই ভবিষ্যতকে নিয়ে অমূলক দুশ্চিন্তা। রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ সময়েই আমরা খারাপ পরিণতির কথা চিন্তা করে হতাশা ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই। ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সমাজিক যে কোনো প্রকৃত বা সাম্ভাব্য সমস্যাকে নিয়ে আমাদের চিন্তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খারাপ দিকটা নিয়েই আবর্তিত হয়। অথচ সকল অবস্থায় ভাল চিন্তা করা, আল্লাহর রহমতে সকল বিপদ কেটে যাবেই এইরূপ সুদৃঢ় আশা পোষণ করা মুমিনের ঈমানের দাবী এবং আল্লাহর অন্যতম ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ। যে বান্দা রহমতের আশা করতে পারেন না তিনি তো আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করতে পারলেন না। আর আল্লাহ তো বান্দার ধারণা ও আস্থা অনুসারেই তার প্রতি ব্যবহার করবেন। সাম্ভাব্য বিপদের ক্ষেত্রে তো নয়ই, প্রকৃত বিপদের ক্ষেত্রেও মু’মিন কখনোই হতাশ হন না। -কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি শোকর অর্থ কৃতজ্ঞতা, রিদা অর্থ সন্তুষ্টি এবং কানা‘আত অর্থ স্বল্পে তুষ্টি। এই তিনটি কর্মে মুমিনের মনকে অনুশীলন করতে হবে। এগুলি দুনিয়া ও আখিরাতের অনন্ত নিয়ামতের উৎস। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অগণিত নেয়ামত রয়েছে। আবার অনেক কষ্টও রয়েছে। মানুষের একটি বড় দুর্বলতা আনন্দের কথা তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া ও কষ্ট বেদনার কথা বারংবার স্মরণ করা। এই দুর্বলতা কাটাতে হবে। জীবনের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই ইতিবাচক হতে হবে। আমরা কখনোই কষ্ট ও অসুবিধাগুলিকে বড় করে দেখব না। কষ্টের কথা বারংবার মনে করে জাবর কাটব না। বরং আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত, শান্তি, সুখ বারংবার স্মরণ করে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করব। এই ইতিবাচক ও কৃতজ্ঞতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করা মানব জীবনের শ্রেষ্টতম সম্পদ। এই দৃষ্টিভঙ্গি যে কোনো মানুষের জীবনকে অনন্ত শান্তি ও পরিতৃপ্তিতে ভরে দেয়। কষ্টের অনুভুতিকে ক্রমান্বয়ে কৃতজ্ঞতার অনুভুতিতে রূপান্তরিত করতে হবে। আল্লাহর অগনিত নিয়ামতের মধ্যে কিছু কষ্টের কারণে যদি গোনাহ ক্ষমা হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায় তাহলে অসুবিধা কী? দুনিয়ায় প্রতিটি মানুষের জীবনেই বিপদাপদ ও অসুবিধা আসে। কাজেই আমার জীবনে তো কিছু অসুবিধা থাকবেই। বিপদ ও সমস্যা তো আরো কঠিন হতে পারত। অনেকের জীবনেই তো আমার চেয়েও অধিক কষ্ট আছে। কাজেই আমার হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জীবনের সকল আনন্দ, সুখ, খুশি, লাভ, পুরস্কার ইত্যাদি সকল নিয়ামতের কথা প্রসঙ্গ ও সুযোগ পেলে অন্যদেরকে বলতে হবে। আমরা সাধারণত সুখের বা আনন্দের কথার চেয়ে দুঃখের কথা বলতে বেশি আগ্রহী। আমাদেরকে এর বিপরীত বলার অভ্যাস আয়ত্ব করতে হবে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার দাবি, বান্দার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। যদি কোনো ব্যক্তি আমাদের প্রতি সামান্যতম সহযোগিতা করেন তবে আমাদের দায়িত্ব, তার প্রতি পরিপূর্ণ আন্তরিকতার সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। সম্ভব হলে তাকে প্রতিদান দেওয়া। না হলে তার জন্য দু‘আ করা এবং তার উপকারের কথা অকপটে সকলের কাছে স্বীকার করা ও বলা। -নির্লোভতা যুহদ অর্থ নির্লোভতা, নির্লিপ্ততা, বৈরাগ্য ইত্যাদি। ইসলামে সন্ন্যাস বা সংসারত্যাগের বৈরাগ্য নিষিদ্ধ। সাংসারিক ও সামাজিক জীবনের মধ্যে অবস্থান করে জাগতিক সম্পদ ও সম্মানের লোভ থেকে হৃদয়কে বিমুক্ত রাখতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সচ্ছলতা, অসচ্ছলা, সম্মান ও অসম্মান সকল অবস্থায় হৃদয়ের অবস্থা এক থাকাই ইসলামী বৈরাগ্য। -আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) প্রেম আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-কে অন্য সকল কিছু এবং নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসতে হবে। এবং আল্লাহর ওয়াস্তে সকল মুমিনকে ভালবাসতে হবে। ভালবাসা অর্জনের অন্যতম উপায় সাহচার্য ও অনুকরণ। সাহাবীগণ এভাবেই সত্যিকারের নবীপ্রেম অর্জন করতে পেরেছিলেন। পরবর্তী কালের নবীপ্রেমিকগণ দৈহিক সাহচার্য না পেলেও সার্বক্ষণিকভাবে তাঁর রেখে যাওয়া কুরআন ও হাদীস পাঠ, তাঁর ও তাঁর সহচরদের জীবনী পাঠ ও আলোচনার মাধ্যমে তাঁর রুহানী সাহচার্য লাভ করে তাঁর ভালবাসা অর্জন করেছিলেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরই হুবহু অনুকরণ ও অনুসরণ করে হৃদয়ের মধ্যে এই ভালবাসাকে চিরস্থায়ী ও পরিপূর্ণ করেছিলেন তাঁরা। আমাদেরও এপথে এগোতে হবে। নবীর (সা.) সকল উম্মাতকে ভালবাসা নবী-প্রেমের অংশ। যার মধ্যে তাঁর আনুগত্য, অনুসরণ ও অনুকরণ যত বেশি তার প্রতি মুমিনের প্রেমও তত বেশি। আল্লাহর ওয়াস্তে এই ভালবাসা। দল, মত, পাওনা, দেনা ইত্যাদি কারণে তা বাড়ে না বা কমে না। বরং দীন পালনের কারণে তা বাড়ে-কমে। -সুন্দর আচরণ সুন্দর আচরণের তিনটি দিক রয়েছে। প্রথমত: কথা ও আচরণের ক্ষেত্রে বিনম্রতা, প্রফুল্ল চিত্ত, হাস্যোজ্জ্বল মুখ, সত্য পরায়ণতা, কম কথা বলা ও বেশি শ্রবণ করা। দ্বিতীয়ত, কোনো কারণে ক্রোধান্বিত হলে গালি গালাজ, অভিশাপ ও সীমালঙ্ঘণ বর্জন করা। তৃতীয়ত, ক্ষমা করা, বিশেষত প্রতিশোধ নেওয়া বা প্রতিউত্তর দেওয়ার ক্ষমতা থাকলে ক্ষমা করে দেওয়া। বিশেষ দ্রষ্টব্য :সবগুলো বিষয়েই রেফারেন্স আছে আমি আসলে যেহেতু সামারি তৈরি করছি সে ক্ষেত্রে আমি রেফারেন্স টা দিলে আমার লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে এজন্য আমি রেফারেন্সগুলো এভোয়েড করছি, আপনারা বিস্তারিত চাইলে বইটি পড়তে পারেন,লিংক দিয়ে দিচ্ছি । চলবে---- ইনশাআল্লাহ https://www.rokomari.com/book/75371/rahe-belayat

 

No comments:

Post a Comment